1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৩:১০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
বাগেরহাটের কচুয়ায় নির্বাহী অফিসারের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন চট্রগ্রামে কোস্টগার্ড ও মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়োজনে ট্রাফিক কন্ট্রোল প্রশিক্ষণ পাইকগাছায় ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংসকরণের উদ্বোধন নগর পরিবেশ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সহযোগিতা প্লাটফর্ম শীর্ষক কর্মশালা আওয়ামী লীগের সময়ে হওয়া বিদ্যুৎ-সংক্রান্ত সব চুক্তি পর্যালোচনা করা হবে-অর্থ উপদেষ্টা কিংস্টন টেস্ট,মাত্র ২৭ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিতে ১১১ জনের মৃত্যু গাজায় একদিনে আরো ৭৮ ফিলিস্তিনি নিহত আগস্ট মাস থেকে ১৫ টাকা দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার-খাদ্য উপদেষ্টা ‘জাতীয় সংস্কারক’ উপাধি পেতে ইচ্ছুক নন ড. ইউনূস

জীবন যুদ্ধে হার না মানা জোসনার সফলতার গল্প

  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪
  • ১৪৩ বার পড়া হয়েছে

মোঃ জাহিদুল ইসলাম :: মোসা. জোসনা,বয়স ২৫ বছর। বাবা মোঃ জসীম, বর্তমানে অবসর। মাতা মিনু বেগম, পেশা-গৃহিনী। তিন বোনের মধ্যে জোসনা বাবা মায়ের বড় সন্তান। স্বামী মৃত মোজাফ্ফর হোসেন , এবং জোসনার একটি কন্যা সন্তান আছে।

খুলনা জেলার খালিশপুর এলাকায় ক্রিসেন্ট গেট সংলগ্ন রেল লাইনের পাশে ঘর তৈরী করে বসবাস করছে। তিন বোন ও বাবা মা সহ ৫ (পাঁচ ) সদস্য বিশিষ্ট পরিবার। জোসনার বাবা ছিল একজন মিলের শ্রমিক। বাবার স্বল্প আয়ে কোন রকম দিন যাপন করছিল। আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে দরিদ্র বাবা সংসারের অভাব অনটনে বড় সন্তান হিসাবে ৭ম শ্রেনীতে থাকা অবস্থায় বাল্যবিবাহ দিয়ে পড়া লেখা বন্ধ করে দেয়। জোসনার স্বামী একটি কোম্পানীতে চাকরী করত। জোসনা স্বামী ও সন্তান নিয়ে ঢাকা শহরে মধ্যবিত্ত পরিবারের মত সুখেই ছিল। নিয়তি বড়ই কঠিন হঠাৎ করে ২০১৬ সালে ব্রেনস্টোক করে তার স্বামী মৃত্যুবরন করে। শ্বশুর বাড়ি এমনকি বাবার বাড়িতেও মা মেয়ের সংসার দেখার কেউ ছিল না। দুজনের সংসার এখন বড় অসহায়। এই অবস্থায় সে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।

নিরুপায় হয়ে ২০১৭ সালে মেয়ে নিয়ে ঢাকা থেকে খুলনা বাবার সংসারে কোন রকম ঠাঁই হয়। এদিকে ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর কারনে জোসনার বাবার আয় বন্ধ হয়ে যায়। সে ভাবতে থাকে মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে কোন একটা আয়মূলক কাজে অংশগ্রহন করতেই হবে, যা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে পারি। এভাবে অনেক ভেবে চিন্তে মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন টেইলারিং এর কাজ শিখবো যেন আয় করে নিজের খরচ চালাতে পারি।

এমতাবস্তায় ২০২০ সালে দৌলতপুর শাখা অফিসের আওতায় ব্র্যাক দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচীর স্টার প্রোজেক্টে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণের সুযোগ সুবিধার কথা জানতে পারে। অভিভাবকের অনুমতি ও নিজের পছন্দের ট্রেড হিসেবে টেইলরিং এন্ড ড্রেস মেকিং ট্রেডে ০৩ মাসের কোর্সে অন্তর্ভুক্ত হয়।
প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময় নিয়মিত ওয়ার্কপ্লেসে যেয়ে মনোযোগ সহকারে কাজ শিখতে থাকে। নিজের ইচ্ছা শক্তির কারনে মাত্র তিন মাসে কাটিং ও সেলাই ভালোভাবে শিখতে পারে। কোর্স শেষে জোসনার আগ্রহ ও দক্ষতা দেখে এমসিপি তার দোকানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। তিন মাস প্রোডাকশনে কাজ করে বেশ ভালোই উপার্জন করে নেয়। সেই উপার্জন থেকে নিজের জন্য কিছু টাকা খরচ করে বাকী টাকা থেকে একটি পুরাতন সেলাই মেশিন ক্রয় করে। বাড়ীর সামনে রেল লাইনের পাশে সরকারী জায়গায় ছোট একটি দোকান ঘর তৈরী করে মেশিন নিয়ে টেইলরিং এর কাজ শুরু করে। এলাকার পাড়াপ্রতিবেশি দের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে কাজ করে আগের তুলনায় উপার্জন বৃদ্ধি পায়। সেই টাকা থেকে নিজের ও মেয়ের খরচ মেটানোর পাশাপাশি বাবা মায়ের সংসারের খরচ করতে থাকে। ২০২১ সালে দুইটি ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে বেশি অডার্র পেয়ে কাজ করে ঐ টাকা দিয়ে আরো একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে।

২০২২ ও ২০২৩ সালে দৌলতপুর শাখার দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচীর এসপিএ-স্টার ও কেএফডব্লিউ-স্টার প্রোজেক্টে এমসিপি (দক্ষ প্রশিক্ষক) হিসাবে ৬ মাসের কোর্সে ০২ জন করে ০৪ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এম সি পি হিসাবে ব্র্যাক থেকে যে সম্মানী পেয়েছে তা দিয়ে একটি পাওয়ার সুইং মেশিন ক্রয় করে যা দিয়ে সে অল্প সময়ে অনেক বেশি কাপড় সেলাই করতে পারে। বর্তমানে তার আয় প্রায় ২০,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকা। এখন তার মেশিন ৩ টা ফলে কাজের অডার্রও বেশি যার কারনে কর্মী প্রয়োজন। তাই সে প্রশিক্ষণ দেওয়া ০২জন শিক্ষার্থীকে তার দোকানে কর্মী হিসাবে নিয়োগ দেন। তার অতুলনীয় সফলতার জন্য ব্র্যাকের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।

ভবিষ্যতে সে তার প্রতিষ্ঠানকে বড় করে পোশাক তৈরীর কারখানা হিসাবে দেখতে চায়। যেখানে তার মত অসহায় মেয়েরা যাতে কাজ শিখে স্বাবলম্বী হতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট