1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বিপদজনক মোড়ে ‘বালুর বেড’

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৬৮ বার পড়া হয়েছে

অরুন দেবনাথ, ডুমুরিয়া, খুলনা প্রতিনিধি:: খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে খর্ণিয়া ব্রীজের পশ্চিমপাশে বিপদজনক ও দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত বরাতিয়া মোড়ে বালি বিক্রির স্পট গড়ে তোলায় এলাকায় জলাবদ্ধতা, ফসলের ক্ষতি, মানুষের চলাচল ও পরিবেশের মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করেছে। অনেক প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুলনা থেকে চুকনগর যাওয়ার পথে খর্ণিয়া ব্রীজের পশ্চিমপাশে মহাসড়কের সাথেই সড়ক ও ব্যক্তি মালিকানার জমিতে বেশ-বড় আকারের বালির বিক্রির স্পট বা বালির বেড গড়ে তোলা হয়েছে। শিবসা নদী-সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ২-৩টি বড় বড় বালিবোঝাই কার্গো খর্ণিয়া ব্রীজের নিচদিয়ে বহমান ভদ্রানদীতে আসে। সেখান থেকে বড় পাইপের মাধ্যমে নদীর লবনপানি-সহ পাম্প করে ওই বালির বেডে ফেলা হয়। সে কারনে প্রতিদিনের লবনাক্ত-জল জমা হয়ে রবিশষ্যের জন্য বিখ্যাত এই এলাকার সবজি ক্ষেতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া ও স্কেভেটরে করে প্রতিনিয়ত উচু ট্রাকে তোলার সময় বালি উড়ে পড়ে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি করছে। এছাড়া ‘বিপদজনক ও দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত বাকে’র সামনে সংকুচিত ওই স্থানে প্রতিনিয়ত বড়-বড় ট্রাক ঘোরানোর ফলে উভয় দিক থেকে আসা যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ঝুকির মুখে পড়ছে। তাছাড়া ওই এলাকা থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের চলাচলও ভীষণ ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এমনকি বালির বেডের পাশেই মসজিদ, মুসল্লিদের রাস্তা পারাপারেও বিপদ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিদিন শিবসা নদী থেকে ২-৩টি কার্গোতে ৪-৫ হাজার ফুট করে ‘কাদা-বালি’ বা ‘ধুলা-বালি’ খর্ণিয়া নদীতে আনা হয়। সেই বালি বেডে আনলোড হওয়ার পরে সারাদিন-রাত ধরে ১০ চাকার বড়-বড় ১০-১২টি ডাম্পার ট্রাকে করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। এখানে উল্লেখ্য ওই কাদা-বালি সাধারণত এলাকার বিভিন্ন কৃষিজমি ভরাটের কাজেই ব্যবহার হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, এই বালির ব্যবসাটি বেশ লাভজনক হওয়ায় খুলনা থেকে আসা আসল মালিক ‘রানা ভাই’ এলাকার প্রশাসন-মিডিয়া-মাস্তান সবকিছু ম্যানেজ করার জন্য ইতোপূর্বে খর্ণিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা-কে মালিক নামদিয়ে তাকে লাভের ভাগ দিতো। ২মাস আগে রাষ্ট্রক্ষমতার বদল ঘটলে অনেককিছুর মতো ওই বেডের কথিত মালিকানায়ও পরিবর্তন ঘটে। বর্তমানে আটলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা তথা এক জনপ্রতিনিধিকে মালিক ঘোষণা করে ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে া মূলত এরা রাজনৈতিক মালিক।
এ প্রসঙ্গে বরাতিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মজীবী গোবিন্দ মল্লিক বলেন, ওদের কারণে গত বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় আমরা এলাকাবাসী এই বালি বেডের সামনে মানববন্ধন করেছিলাম। ওদের বালিতে আমাদের যাতায়াত সমস্যা ও পরিবেশ নষ্ট হওয়া ছাড়াও এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র স্লুইচ গেটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা খুলনা জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদনও করেছিলাম। সেখান থেকে রিপোর্ট চেয়েছিলো ডুমুরিয়া এসি ল্যান্ডের কাছে। তিনি নায়েবের কাছে দায়িত্ব দেন, কিন্তুঅজ্ঞাত কারণে আজাবধি সেই রিপোর্টও হলো না, বা সরকার আমাদের পানি নিষ্কাশনের গেটটিও সংস্কার করলো না। ওই বালুর বেডের বিপরীত পাশের বাসিন্দা মঞ্জুরুর রহমান শেখ বলেন, সড়কের বিপদজনক টানিং পয়েন্টে ওই বালুর বেড থেকে হর-হামেশাই ১০ চাকার ভারী-বোঝাই ট্রাক চলাচল করায় স্কুল শিক্ষার্থী-সহ আমাদের সকলকে মারাত্মক ঝুকির মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে। তাছাড়া সংকুচিত এই স্থানে ট্রাক ঘোরানোর ফলে উভয় দিক থেকে আসা যানবাহনও ঝুকির মধ্যে পড়ে। আর প্রতিনিয়ত বালি উড়ে আমাদের বাড়ি-ঘরে বসবাস করা দুর্বিষহ হওয়ার পাশাপাশি গাছ-পালা-সবজিরও ব্যাপক ক্ষতি করছে। খর্ণিয়ার সেলিম আবেদ বলেন, আমাদের এই মরা নদীর মাঝে সব-সময়ই ২-৩টি বালিবাহি কার্গো অবস্থান করায় নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে। সংবাদ সংগ্রহকালে বালু বেডের কেয়ারটেকার জাহিদুল ইসলাম বলেন, অতো কিছু লিখতি হবে না, শুধু আপনার নাম্বারটা দেন, সব ঠিক হয়ে যাবেনে।
ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আরাফাত হোসেন বলেন, আমি নিজে অবস্থা দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো। খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে খর্নিয়া ব্রীজের পশ্চিম-পাশে বরাতিয়া বাকটি দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত। সেখানে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাস্তার পাশে বালি ব্যবসাকারি ও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট