1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
ভারতের পুশইনের ঘটনা সুপরিকল্পিত এবং ন্যাক্কারজনক-বিজিবি মহাপরিচালক আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করেছেন নির্বাচন কমিশন সাউথ এশিয়া ফ্রেন্ডসিপ অ্যাওয়ার্ড পেলেন মোরেলগঞ্জের ডা: নজরুল ইসলাম ফারুকী পুলিশের হাতে কোনো মারণাস্ত্র থাকবে না-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নেপালের ডেপুটি স্পিকারের সাক্ষাৎ সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ নিষিদ্ধ-প্রজ্ঞাপন জারি বাগেরহাট পৌর ও সদর উপজেলা যুবদলের প্রস্তুতি সভা চাঁদপুরে কোস্টগার্ডের অভিযানে ২৫ কেজি গাঁজা জব্দ সামরিক সংঘাতে পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের ক্ষতি ২২ গুণ বেশি সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের বিষয় তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি

পাইকগাছা পৌরসভায় সুপেয় পানির সংকট চরমে

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

পাইকগাছা ( খুলনা )প্রতিনিধি:: লবণ পানি-অধ্যুষিত উপকূলবর্তী খুলনার দক্ষিণ জনপদ পাইকগাছা। এ অঞ্চলে সুপেয় পানির বড়ই অভাব। এলাকার মানুষ ছোটবড় পুকুর, দীঘি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি শোধন ও সরবরাহ করে থাকে। পাইকগাছা পৌরসভাও এর ব্যাতিক্রম নয়।পরীক্ষা করে দেখা গেছে পৌরসভায় গভীর নলকূপ বসানোর উপযুক্ত নয়। আবার পানি সংরক্ষণের মত বড় পুকুরেরও অভাব। দীর্ঘদিন ধরে সুপেয় পানির চরম সংকট হওয়ায় পানির অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছে এলাকাবাসী। পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারায় অনেকেই পুকুরের শ্যাওলাভর্তি, দুর্গন্ধযুক্ত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন পৌরবাসী। সরজমিনে পৌর সদরস্থ মধুমতি পার্কে পানি প্রকল্পের আওতায় বি ব্লকে পানি নিতে আসা শুধু পৌরবাসী নয় পার্শ্ববর্তী লস্কর ইউনিয়নের কড়ুলিয়া গ্রাম, স্মরণখালী, মাঠাম, আলমতলা নারী-পুরুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে কেউ কলসে, কেউ পটে করে পানি সংগ্রহ করেন। সেখানে এখন ধূ ধূ করছে। জনশূন্য। প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ৯নং ওয়ার্ড থেকে আসা চঞ্চলা রাণী, আরতী ও নাজমা আক্তারদের সাথে কথা হলে বলেন, এখান থেকে আমরা নিয়মিত পানি নেয়। কয়েক দিন ধরে পানি নেই। বাধ্য হয়ে পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করছি। উপজেলার লোনা পানি কেন্দ্রের পুকুর থেকে ড্রামে পানি তোলার সময় ভ্যানচালক সুশান্ত মন্ডল বলেন, পৌরসভা যে পানি দেয় খাওয়া যায় না। আমি প্রায় ৩/৪ কিলোমটার দূরে শিববাটি, পাশে সরল ও বাতিখালী গ্রামের অনেক মানুষদের খাওয়ার জন্য এখান থেকে পানি সরবরাহ করি। আর পৌরসভা আজকে পানি দেয় তো কালকে দেয় না। উপজেলা মডেল মসজিদের ইমাম আশরাফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি পানি সাপ্লাই অনিয়মিত। শুনেছি পানি সংকটের কারণে পৌরসভা পানি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু পানি ছাড়া তো এক দিনও চলা যায় না। এরকম নানাবিধ অভিযোগের কথা শোনা যায়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পুকুর থেকে পানি নিতে আসা রুপালী, আক্তারের মা, বাসন্তী রাণী, টেলিফোন এক্সচেঞ্জের ছ্যালোযুক্ত পুকুর থেকে পানি আনা শেফালী, অর্চনা রাণী, উপজেলা পরিষদের পুকুর থেকে পানি আনা নজর আলী, রোজিনা, আমেনারা। প্রত্যেকেই অত্যন্ত নিরুপায় হয়ে শ্যাওলাভর্তি, দুর্গন্ধযুক্ত পুকুরের পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন। এবং পড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। এদিকে জানা যায়, পানির সংকট নিরসনে প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯১৪ সাল থেকে পৌর পানি শাখার মাধ্যমে ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টি ওয়ার্ডে পানি সরবরাহ শুরু করেন পৌর কর্তৃপক্ষ। ওই বছরই সরল পুকুর পাড়ে তিনটি পাম্প হাউজের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে ট্রিটমেন্ট করে সরবরাহ করেন। তখন গ্রাহক সংখ্যা ছিল মাত্র ২৫০টি। বর্তমানে হাউজের সংখ্যা ৫ হাজারের উর্ধ্বে। এত বিপুল চাহিদার মধ্যে পৌর কর্তৃপক্ষ মাত্র ১২ শত গ্রাহকদের পাইপ লাইনের মাধ্যমে সকালে ও বিকেলে সুপেয় পানি সরবরাহ করে আসছিল। আর পানি সংকটে বান্দিকাটি, গোপালপুরের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত। পানি সংকটে ওই তিন ওয়ার্ড পানি দিতে না পারার দায়ভার স্বীকার করেছেন কর্তৃকপক্ষ। সম্প্রতি মানুষের চাহিদার তুলনায় পৌরসভায় পানি অনেক কম দিতে বাধ্য হচ্ছে। সকাল বিকালে দু’বার এর পরিবর্তে ১বার পানি সরবরাহ করছে। অনেক সময় একদিন পর পর পানি সরবরাহ করে। পানি মান সহ বিবিধ প্রশ্ন উঠালে পৌর পানি সরবরাহ শাখা বিলক্লার্ক মোঃ শাহিনুর হোসেন এ প্রতিনিধিকে জানান, পানির গুণাগুণ ভালো আছে কিনা তার জন্য প্রতি ৬ মাস পর পর কুয়েট খুলনা হতে পানি টেস্ট করা হয়। গ্রাহকের নিকট ভালো পানি দেওয়ার জন্য ২০১৮ সালে পৌরসভার পার্শ্ববর্তি ইউনিয়ন গদাইপুরের মানিকতলা নামক স্থানে একটা বোরিং করে সেখান থেকে পানি সরবরাহ করে আসছে। কিন্তু দিন দিন গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ায় একটা পাম্প হাউজ দিয়ে পানি সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। একটি পাম্প যদি নষ্ট হয় তখন সেটি মেরাতম করতে সময় লাগে মিনিমাম ৭ দিন। যার কারণে পৌরসভা গদাইপুর মোড়ে একটি জমি ক্রয় করে। পুকুর থাকায় সেটা ভরাট করে সেখানে একটি পাকা পাম্প হাউজের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে পৌরসভার অর্থায়নে। বিদ্যুৎ এর ফোর ফোরটি লাইন না থাকায় বিদ্যুৎ অফিস প্রায় লক্ষাধিক টাকা জমা দিয়ে দুইটি কারেন্টের পোল ক্রয় করে নির্মাণ করা হয়। সেখানে নিজস্ব তিনটি ট্রান্সমিটার ক্রয় করে বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। কারেন্টের সংযোগও নেওয়া শেষ। মানিকতলা হতে গদাইপুর জমি পযর্ন্ত ৪” ই ক্লাস পাইপ বসানোর কাজ ও শেষ করা হয়েছে ঠিকাদারের মাধ্যমে। জনগনের নিকট ভালো পানি দেওয়ার জন্য এখন বোরিং এর কাজটা শেষ হওযা জরুরি। না হলে পৌরসভায় কোন ভাবে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। পৌরসভার ভিতরে এখন ৫০% লোকের বাড়িতে পানির লাইন আছে। গ্রাহকের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও পানি দেওয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া প্রায় ১ বছর ধরে নতুন পানির লাইনের সংযোগ দেওয়া বন্ধ আছে। অস্বাস্থ্যকর, দুর্গন্ধযুক্ত পুকুর থেকে খাবার পানি সংগ্রহকারী পরিবারের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবর রহমান বলেন, এভাবে চলতে থাকলে হেপাটাইটিস এ, কলেরা, টাইফয়েড, আমাশা, ডায়রিয়া, এলার্জি সহ পানিবাহিত রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পারে। যাহা এলাকাবাসী স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়বে। এব্যাপারে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, আপনারা জানেন এ অঞ্চলটি লবণ পানি-অধ্যুষিত। চারিদিকে পানি। তবে বিশুদ্ধ খাবার উপযোগী পানি নাই। পৌরসভার বর্তমান পানির গ্রাহকের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় পানি সরবরাহ অনেক কম থাকায় এ সংকট উত্তরণে গদাইপুরে পাম্প হাউজের কাজ চলমান। সকলের সহযোগিতায় খুব দ্রুত বাস্তবায়ন হলে পৌরসভা সহ আশেপাশের এলাকার মানুষের সুপেয় পানি আর সংকট থাকবে না। দ্রুত বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পৌরবাসী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট