সোহেল সুলতান মানু, চিতলমারী (বাগেরহাট):: বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার মুক্ত বাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি লিছন শেখকে অব্যহতি প্রদান করা হয়েছে। এসএসসি, এইচএসসি এবং ডিগ্রী পাশের সনদ জাল প্রমানিত হওয়ায় যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে তাঁকে অব্যহতি দেওয়া হয়। তদস্থলে মাহাবুবুর রহমানকে এডহক কমিটির অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য সভাপতি মনোনীত করা হয়েছে। যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. মোঃ কামরুজ্জামানের ২৭ আগস্ট স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে লিছন শেখকে মুক্ত বাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত করা হয়। লিছন শেখের এসএসসি, এইচএসসি এবং ডিগ্রী পাশের ৩ টি সনদ বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২৫ মে মাহাবুবুর রহমান যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবরে লিখিত আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয় পরিদর্শক ১৬ জুন চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ২৯ জুন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে ৩ সদস্যর টিমকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। তদন্ত টিম দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২২ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ২৯ জুলাই যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে তদন্ত প্রতিবেদেন প্রেরন করেন। তদন্তে লিছন শেখের এসএসসি, এইচএসসি এবং ডিগ্রী পাশের ৩ টি সনদ জাল প্রমানিত হওয়ায় ২৭ আগস্ট যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে তাঁকে মুক্ত বাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতির পদ থেকে অব্যহতি প্রদান করা হয়।
সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) দুুপুরে অভিযোগকারী মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ডকে ধোকা দিয়ে লিছন শেখ মুক্ত বাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত হয়। বিষয়টি আমি বুঝতে পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ করি। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তাঁর সনদ জাল প্রমানিত হওয়ায় বোর্ড থেকে আমার আইডিতে লিছনকে অব্যহতি দিয়ে তদস্থলে আমাকে সভাপতি মনোনীত করে চিঠি দিয়েছেন। আজ আমি সেই চিঠি হাতে পেয়েছি।’
মুক্ত বাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির অব্যহতি দেওয়া সভাপতি লিছন শেখ বলেন, ‘আমার সার্টিফিকেট বৈধ। আমি চ্যালেঞ্জ করব। আমি এখনও সভাপতি। কারণ আমার হাতে কোন চিঠি পৌঁছায়নি।’
মুক্ত বাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলক চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি লিছন শেখকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এখনও অফিসিয়ালী কোন চিঠি পাইনি।’
বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি মিস্ত্রি বলেন, ‘এসএসসির সনদে লিছন শেখ যে রোল নম্বর ব্যবহার করেছে সেই নম্বরে ওই সালে একটি মেয়ে পাশ করেছে।
শেরে বাংলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান কাজী বলেন, ‘লিছন শেখ শেরে বাংলা কলেজের ২০০৯ সালে এইচএসসি ও ২০১২ সালের যে সনদ দাখিল করেছে ওই সাল দুটিতে সে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেনি।’
তদন্ত কমিটির সদস্য উপজেলা আইসিটি অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে লিছন শেখের দাখিলকৃত এসএসসি, এইচএসসি এবং ডিগ্রী পাশের ৩ টি সনদই জাল।
এ ব্যাপারে জানতে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শকের স্বাক্ষরিত চিঠির নিচের টেলিফোন নাম্বার ও বোর্ডের ওয়েব সাইডে দেওয়া মোবাইল ফোনে ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি। #
Leave a Reply