1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
বটিয়াঘাটায় বিষধর সাপের কামড়ে এক কিশোরের মৃত্যু মোরেলগঞ্জে অনলাইন রিপোর্টার্স ইউনিটের আহবায়ক কমিটি গঠন, শিব্বির আহ্বায়ক, লিয়াকত সদস্য সচিব কঙ্গোতে পৃথক দুটি নৌ-দুর্ঘটনায় নিহত ১৯৩ গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৬৪ হাজার ৭০০ ছাড়াল নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা জাকসু নির্বাচনের ভোট গুনতে সময় লাগল ৪০ ঘণ্টা ভোট গণনা শেষ করে আজ রাতেই ফলাফল ঘোষণার আশা-প্রধান নির্বাচন কমিশনার এশিয়া কাপ.হংকংকে হারিয়ে দুর্দান্ত শুরু বাংলাদেশের তফসিলের আগেই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি মির্জা ফখরুলের গণছুটি কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের

অনলাইনে দেহ ব্যবসার ফাঁদ, ৭ বছরে চক্রটির আয় ১০০ কোটি টাকা

  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪
  • ১৮২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠতি বয়সী তরুণীদের টার্গেট করে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি, ট্যালেন্ট হান্টিং ও মডেলিংয়ের নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদে ফেলতো একটি চক্র। এরপর তরুণীদের ব্যক্তিগত ছবি হাতিয়ে নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অনলাইনে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হতো।

শত শত তরুণীকে ফাঁদে ফেলা চক্রের মূলহোতাসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা ও মেডিকেল শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান (২৫) ও তার প্রধান সহযোগী খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬), মো. জাহিদ হাসান কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ ওরফে দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার ওরফে পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম (২৪)।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও যশোরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহম্মদ আলী মিয়া।

যেভাবে প্রতারণা শুরু

তিনি বলেন, একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া নামে ফেসবুক আইডি ও পেজ খুলে ফ্রিল্যান্সিং কাজ, লোভনীয় চাকরি, মডেল বানানো, মেধা অন্বেষণের নামে অল্প বয়সী তরুণীদের কাছ থেকে কৌশলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিয়ে তা দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে তাদের দেহব্যবসায় নামানোর এক চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি।

যেসব তরুণীদের টার্গেট

চক্রটি মূলত উঠতি বয়সী তরুণীসহ যেসব তরুণী পারিবারিক ভাঙনের শিকার ও আর্থিক সমস্যা রয়েছে তাদের টার্গেট করত। চক্রটি কাজের সুযোগ দেওয়ার নামে ইন্টারভিউতে ডাকত। এরপর তাদের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে সুযোগ দেওয়ার কথা বলে আপত্তিকর ছবি নিতো।

প্রাথমিকভাবে কাজে আগ্রহী তরুণীদের চাহিদা মতো টাকা ও প্রয়োজন মেটাতো তারা। এরপর ধীরে ধীরে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করা হতো তরুণীদের।

সিআইডিপ্রধান আরও বলেন, চক্রের মূলহোতা মেহেদী হাসান এবং তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন মিলে চক্রটি গড়ে তুলেছিল। তারা দুজনেই মেডিকেল শিক্ষার্থী। তারা চিকিৎসা বিদ্যার আড়ালে অল্প বয়সী তরুণীদের ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট তৈরি ও টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ম্যাসেঞ্জারে নানা অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করত।

৭ বছরে চক্রটির আয় ১০০ কোটি টাকা, কিনেছে জমি

গত সাত বছরে অসামাজিক কার্যকলাপ করে প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে চক্রটি। এই টাকা দিয়ে তারা যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা এবং ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জমিও কিনেছে। নির্মাণ করেছে আলিশান বাড়ি। চক্রের সদস্যদের আত্মীয়-স্বজনের ব্যাংক আ্যকাউন্টেও বিপুল অর্থ জমিয়ে রাখার তথ্য মিলেছে।

যেভাবে কাজ করতো চক্রটি

অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী জানান, শুরুতে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন, কখনও মডেল তৈরি, কখনওবা ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার আয়োজন করতো চক্রটি। এতে যারা সাড়া দিত তাদের নিয়ে টেলিগ্রামে গ্রুপ খুলতো।

এরপর তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে বিদেশি বায়ারদের কাছে পাঠানোর কথা বলে মেয়েদের আপত্তিকর ছবি হাতিয়ে নিত চক্রটি। হাতিয়ে নেওয়া সেসব অর্ধনগ্ন ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নগ্ন হয়ে ভিডিও কল বা সরসারি অসামাজিক কাজে বাধ্য করত।

ভুক্তভোগী শত শত তরুণী

চক্রটির টেলিগ্রাম গ্রুপে হাজার হাজার সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। যারা একটি নির্দিষ্ট অর্থ দিয়ে ওই গ্রুপগুলোতে যুক্ত থাকতো। চক্রটি ভিডিওকলের সবকিছু গোপনে ধারণ করে রাখতো। এরপর তরুণীদের বাধ্য করা হতো চক্রটি ভুক্তভোগীদের যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করত। এভাবেই চক্রটির হাতে আধুনিক যৌন দাসীতে পরিণত হয়েছিল শত শত তরুণী। দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার চক্রের মূলহোতা ও তার প্রধান সহযোগীদের শনাক্ত করে।

তরুণীদের নগ্ন ভিডিও বিক্রি করে ১০০ কোটি টাকা আয়

সিআইডিপ্রধান বলেন, সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশ-বিদেশে চক্রটির রয়েছে শক্তিশালী একটি নেটওয়ার্ক। নানা নামে তাদের শতাধিক চ্যানেলে গ্রাহক সংখ্যা কয়েক লাখ। বিভিন্ন বয়সী নারীদের ভিডিওকল ও দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে এবং গোপনে ধারণকৃত সেসব ভিডিও বিক্রি করে চক্রটি প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে। অর্থ লেনদেনের জন্য তারা ব্যবহার করতো এমএফএস বা মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস। এছাড়া ক্রিপ্টো কারেন্সিতেও তাদের হাজার হাজার ডলার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের আড়াল করার সব কলা-কৌশলও এই চক্রের জানা ছিল। ফলে শত শত মোবাইল সিম ব্যবহার করলেও তাদের কোনোটিই প্রকৃত এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন করা নয়। এক্ষেত্রে তারা নিম্ন আয়ের মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিত। সামান্য অর্থ দিয়ে তুলেছে অনেক সিম কার্ড।

১০ লাখ ন্যুড ছবি, ২০ হাজার অ্যাডাল্ট ভিডিও

কন্টেন্ট আদান-প্রদান ও সাবস্ক্রিপশনের জন্য ছিল টেলিগ্রাম প্রিমিয়াম আ্যকাউন্ট এবং বিভিন্ন পেইড ক্লাউড সার্ভিস। অল্প বয়সী ভয়ানক চতুর এই দুই মেডিকেল শিক্ষার্থীর জিম্মায় কয়েক হাজার নারী রয়েছে। আছে টিকটক, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম সেলিব্রেটিরাও। অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপে গোপনে ধারণ করা প্রায় ১০ লাখ ন্যুড ছবি ও ২০ হাজার অ্যাডাল্ট ভিডিওর সন্ধান পাওয়া গেছে বলেও জানান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে পর্নগ্রাফি তৈরি ও তরুণীদের ব্ল্যাকমেইলে ব্যবহৃত ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ এবং আয়ের টাকা লেনদেনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বই জব্দ করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট