1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
পারমাণবিক অস্ত্র না বানানোর চুক্তিতে থাকছে না ইরান ৩৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান, নিহত ২৪ জন-ইসরায়েল ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য জরুরি হটলাইন চালু বিতর্কিত তিন নির্বাচনের আয়োজকদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ বাংলাদেশের গুমবিরোধী পদক্ষেপের প্রশংসা জাতিসংঘের বেনাপোল সীমান্তে ৬ বোতল বিদেশী মদসহ একজন ভারতীয় আটক ও বিভিন্ন পন্য জব্দ মুন্সিগঞ্জে কোস্টগার্ড সদস্য পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক ১ জবির ‘নোঙর’ বাসে সাম্প্রতিক আলোচিত ঘটনার সমাধান ঈদের ছুটিতে মোংলা বন্দরে ২ লাখ ৭০ হাজার টন পণ্য আমদানি রপ্তানি মোংলায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড নৌবাহিনী ও পুলিশের অভিযান

জীবন যুদ্ধে হার না মানা জোসনার সফলতার গল্প

  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪
  • ১২৮ বার পড়া হয়েছে

মোঃ জাহিদুল ইসলাম :: মোসা. জোসনা,বয়স ২৫ বছর। বাবা মোঃ জসীম, বর্তমানে অবসর। মাতা মিনু বেগম, পেশা-গৃহিনী। তিন বোনের মধ্যে জোসনা বাবা মায়ের বড় সন্তান। স্বামী মৃত মোজাফ্ফর হোসেন , এবং জোসনার একটি কন্যা সন্তান আছে।

খুলনা জেলার খালিশপুর এলাকায় ক্রিসেন্ট গেট সংলগ্ন রেল লাইনের পাশে ঘর তৈরী করে বসবাস করছে। তিন বোন ও বাবা মা সহ ৫ (পাঁচ ) সদস্য বিশিষ্ট পরিবার। জোসনার বাবা ছিল একজন মিলের শ্রমিক। বাবার স্বল্প আয়ে কোন রকম দিন যাপন করছিল। আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে দরিদ্র বাবা সংসারের অভাব অনটনে বড় সন্তান হিসাবে ৭ম শ্রেনীতে থাকা অবস্থায় বাল্যবিবাহ দিয়ে পড়া লেখা বন্ধ করে দেয়। জোসনার স্বামী একটি কোম্পানীতে চাকরী করত। জোসনা স্বামী ও সন্তান নিয়ে ঢাকা শহরে মধ্যবিত্ত পরিবারের মত সুখেই ছিল। নিয়তি বড়ই কঠিন হঠাৎ করে ২০১৬ সালে ব্রেনস্টোক করে তার স্বামী মৃত্যুবরন করে। শ্বশুর বাড়ি এমনকি বাবার বাড়িতেও মা মেয়ের সংসার দেখার কেউ ছিল না। দুজনের সংসার এখন বড় অসহায়। এই অবস্থায় সে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।

নিরুপায় হয়ে ২০১৭ সালে মেয়ে নিয়ে ঢাকা থেকে খুলনা বাবার সংসারে কোন রকম ঠাঁই হয়। এদিকে ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর কারনে জোসনার বাবার আয় বন্ধ হয়ে যায়। সে ভাবতে থাকে মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে কোন একটা আয়মূলক কাজে অংশগ্রহন করতেই হবে, যা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে পারি। এভাবে অনেক ভেবে চিন্তে মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন টেইলারিং এর কাজ শিখবো যেন আয় করে নিজের খরচ চালাতে পারি।

এমতাবস্তায় ২০২০ সালে দৌলতপুর শাখা অফিসের আওতায় ব্র্যাক দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচীর স্টার প্রোজেক্টে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণের সুযোগ সুবিধার কথা জানতে পারে। অভিভাবকের অনুমতি ও নিজের পছন্দের ট্রেড হিসেবে টেইলরিং এন্ড ড্রেস মেকিং ট্রেডে ০৩ মাসের কোর্সে অন্তর্ভুক্ত হয়।
প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময় নিয়মিত ওয়ার্কপ্লেসে যেয়ে মনোযোগ সহকারে কাজ শিখতে থাকে। নিজের ইচ্ছা শক্তির কারনে মাত্র তিন মাসে কাটিং ও সেলাই ভালোভাবে শিখতে পারে। কোর্স শেষে জোসনার আগ্রহ ও দক্ষতা দেখে এমসিপি তার দোকানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। তিন মাস প্রোডাকশনে কাজ করে বেশ ভালোই উপার্জন করে নেয়। সেই উপার্জন থেকে নিজের জন্য কিছু টাকা খরচ করে বাকী টাকা থেকে একটি পুরাতন সেলাই মেশিন ক্রয় করে। বাড়ীর সামনে রেল লাইনের পাশে সরকারী জায়গায় ছোট একটি দোকান ঘর তৈরী করে মেশিন নিয়ে টেইলরিং এর কাজ শুরু করে। এলাকার পাড়াপ্রতিবেশি দের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে কাজ করে আগের তুলনায় উপার্জন বৃদ্ধি পায়। সেই টাকা থেকে নিজের ও মেয়ের খরচ মেটানোর পাশাপাশি বাবা মায়ের সংসারের খরচ করতে থাকে। ২০২১ সালে দুইটি ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে বেশি অডার্র পেয়ে কাজ করে ঐ টাকা দিয়ে আরো একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে।

২০২২ ও ২০২৩ সালে দৌলতপুর শাখার দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচীর এসপিএ-স্টার ও কেএফডব্লিউ-স্টার প্রোজেক্টে এমসিপি (দক্ষ প্রশিক্ষক) হিসাবে ৬ মাসের কোর্সে ০২ জন করে ০৪ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এম সি পি হিসাবে ব্র্যাক থেকে যে সম্মানী পেয়েছে তা দিয়ে একটি পাওয়ার সুইং মেশিন ক্রয় করে যা দিয়ে সে অল্প সময়ে অনেক বেশি কাপড় সেলাই করতে পারে। বর্তমানে তার আয় প্রায় ২০,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকা। এখন তার মেশিন ৩ টা ফলে কাজের অডার্রও বেশি যার কারনে কর্মী প্রয়োজন। তাই সে প্রশিক্ষণ দেওয়া ০২জন শিক্ষার্থীকে তার দোকানে কর্মী হিসাবে নিয়োগ দেন। তার অতুলনীয় সফলতার জন্য ব্র্যাকের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।

ভবিষ্যতে সে তার প্রতিষ্ঠানকে বড় করে পোশাক তৈরীর কারখানা হিসাবে দেখতে চায়। যেখানে তার মত অসহায় মেয়েরা যাতে কাজ শিখে স্বাবলম্বী হতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট